➡️রাজস্ব নীতি:

🔹 রাজস্ব আয়ের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে কর। বাংলাদেশের মােট রাজস্ব আয়ের প্রায় শতকরা আশি ভাগ কর থেকে সংগৃহীত হয়। ফলে সরকারি কার্যাবলি সম্পাদনে রাজস্ব প্রধান ভূমিকা পালন করে।

🔹যে রাজস্ব ব্যবস্থা সমাজে ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠা করে উৎপাদন ও বিনিয়ােগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং যা তুলনামূলক সহজ, সরল ও উৎপাদনশীল সেই রাজস্ব ব্যবস্থাকে উত্তম রাজস্ব ব্যবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

🔸 সাধারণ অর্থে রাজস্ব অর্থে রাজস্ব
ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য যে সকল আদর্শ ও নীতি প্রয়ােগ করা হয় সেগুলােকে রাজস্ব নীতি
(Fiscal policy) বলে।

🔹রাজস্ব নীতি গ্রহণ করার সময় নিম্নলিখিত নীতিগুলি বিবেচনায় নেয়া উচিত :

▪️সমতার নীতি : দেশের প্রত্যেক নাগরিককে নিজ নিজ আয় অনুযায়ী কর প্রদান করতে হবে। এই নীতি অনুযায়ী কর প্রদান করলে কর দাতাদের ত্যাগের পরিমাণের সমতা
আসে এবং সামজের সামগ্রিক করভার সর্বাপেক্ষা কম হয়।

▪️সুবিধার নীতি : এই নীতি অনুসারে কর আদায়ের সময় ও কর আদায় পদ্ধতি
এমনভাবে স্থির করতে হয় যাতে কর দাতাদের নিকট উহা সুবিধাজনক হয়।

▫️যেমন:

🔸চাকরিজীবীদের নিকট হতে মাসের শেষে, ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে বৎসর শেষে এবং
চাষীদের নিকট থেকে ফসলের মৌসুম শেষে ফসল উঠার সময় কর আদায় করা উচিত।
আবার সমস্ত কর একসাথে আদায় না করে কিস্তিতে আদায় করার নীতি গ্রহণ করলে করদাতা উৎসাহ বােধ করেন।

🔹উৎসাহ প্রদান :

▪️ রাজস্ব নীতি এমন হওয়া উচিত যাতে রাজস্ব প্রদানকারীরা উৎসাহবােধ করেন।

▪️যেমন- প্রত্যেক করের মাধ্যমে অধিক উৎপাদনশীল এলাকায় অধিক হারে
এবং স্বল্প উৎপাদনশীল এলাকায় কর অবকাশ ঘােষণা করে অধিক ও সুষম উন্নয়নে উৎসাহ প্রদান করে।

▪️করভার বণ্টন : রাজস্ব নীতিতে এমন নীতি অন্তর্ভুক্ত থাকবে যাতে করভার করদাতাদের মধ্যে এমনভাবে বণ্টন হয় যে কেউ অন্যায়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এই ক্ষেত্রে।

▪ সমানুপাতিক হারে চেয়ে প্রগতিশীল হারে কর ধার্য করা উত্তম বলে বিবেচিত হয়। ফলে যার আয় বেশি সে বেশি পরিমাণে এবং যার আয় কম সে পরিমাণে কর বা রাজস্ব পরিশােধ করবে।

🔸যথার্থ রাজস্ব নীতির মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করা সম্ভব কিনা:

🔹 হ্যা, আমি মনে করি যে, যথার্থ রাজস্ব নীতির মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করা সম্ভব। পূর্বেই নীতি যথার্থ না হলে বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি হবে এবং অর্থনৈতিক
উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।

➡️উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য মুদ্রাস্ফীতি ও মুদ্রা সংকোচন নিয়ন্ত্রণে সরকার অন্যান্য নীতির সাথে কর ব্যবস্থা তথা রাজস্ব
ব্যবস্থাকেও অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। মুদ্রা সংকোচনের সময় যখন জাতীয়
আয় হ্রাস পায় তখন করের পরিমাণ হ্রাস করে ব্যয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। অন্যদিকে,
মুদ্রাস্ফীতির সময় করের পরিমাণ বৃদ্ধি করে ব্যয়ের পরিমাণ হ্রাস করে সরকার দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে নিয়ন্ত্রণ করে।

🔸মুক্ত বাজার এবং ধনতান্ত্রিক আয় ব্যবস্থায় আর্থিক বৈষম্য দূরীকরণ এবং দেশের আয়ের সুষম বণ্টনের উদ্দেশ্যে কর ধার্য করা হয়। অতিরিক্ত আয়ের ক্রমবর্ধমান হারে কর ধার্য করে দেশের জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করে জাতীয় আয় পুনঃবণ্টনে উল্লেখযােগ্য ভূমিকা রাখা যায়।

▪️ দেশের শিল্পখাতকে সংরক্ষণের জন্য সরকার দেশী শিল্পে উৎপাদিত পণ্যের অল্প হারে এবং আমদানিকৃত পণ্য ও কাঁচামালের উপর উচ্চ হারে কর আরােপ করার নীতি গ্রহণ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *