➡️ নাবালকের সম্পত্তির আইনগত অভিভাবক :
ইমামবন্দি বনাম মুৎসুদ্ধি (১৯১৮) ৪৫ আই, এ, ৭৩] মামলার সিদ্ধান্ত মােতাবেক
নিম্নলিখিত ব্যক্তিগণ নাবালকের সম্পত্তির অভিভাবক হতে পারেন :
🔸পিতা;
🔸পিতা কর্তৃক উইল দ্বারা নিযুক্ত ট্রাস্টি
🔸পিতার পিতা;
🔸পিতামহ কর্তৃক উইল দ্বারা নিযুক্ত ট্রাস্টি।
⚫মুসলিম আইনের বিধান মতে, এ সকল ব্যক্তিরাই নাবালকের আইনগত অভিভাবক।
আইনগত অভিভাবক কর্তৃক নাবালকের স্থাবর সম্পত্তির হস্তান্তর ইমামবন্দি বনাম মুৎসুদ্দি মামলার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নাবালকের আইনগত অভিভাবক নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে তার স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি বা বন্ধক দিতে পারে :
🔹যেক্ষেত্রে সম্পত্তির মূল্য দ্বিগুণ পাওয়া যায়।
🔹নাবালকের ভরণ পােষণের জন্য অর্থের প্রয়ােজন হলে।
🔹 যে ক্ষেত্রে সম্পত্তির আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি।
🔹যে ক্ষেত্রে সম্পত্তিটি ধ্বংসের সম্মুখীন।
🔹যে ক্ষেত্রে উইলে বর্ণিত দেনা পরিশােধের আর কোনাে উপায় নেই।
🔹 ঋণ পরিশােধ বা জমির খাজনা পরিশােধের জন্য।
➡️নাবালকের অত্যাবশ্যকীয় প্রয়ােজনে যেমন, খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, ইত্যাদি নাবালকের অস্থাবর সম্পত্তি আইনগত অভিভাবক, বিক্রি কিংবা বন্ধক দিতে পারেন। এ প্রয়ােজনের মাত্রা অবশ্য নাবালকের পিতার আর্থিক অবস্থার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে কার্যত অভিভাবক :
🔹যে সকল ব্যক্তি স্বাভাবিকভাবে নাবালকের সম্পত্তির অভিভাবকত্ব দাবি করতে পারে তাদেরকে আইনগত অভিভাবক বলা হয়। কিন্তু কোনাে ব্যক্তি স্বাভাবিক আইনানুগ অভিভাবক বা আদালত কর্তৃক অভিভাবক নিযুক্ত না হয়েও, স্বেচ্ছায় নাবালকের দেহ ও সম্পত্তির হেফাজতের দায়িত্বভার স্বয়ং গ্রহণ করে থাকলে তাকে কার্যত অভিভাবক (Defact guardian) বলে। মা, ভাই, চাচা, মামা বা অন্য কেউ কার্যত অভিভাবক হতে পারে।
⭕কার্যত অভিভাবক কর্তৃক সম্পত্তি হস্তান্তর:
🔹কার্যত অভিভাবক নাবালকের সম্পত্তির শুধু হেফাজতকারী মাত্র।নাবালকের স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি, বন্ধক, বিনিময় বা অন্যভাবে হস্তান্তরের কোনাে অধিকার কার্যত অভিভাবকের নেই।
➡️ইমামবন্দি বনাম মুৎসুদ্দি মামলায় বলা হয়েছে যে, কার্যত অভিভাবক কর্তৃক কোনাে সম্পত্তি হস্তান্তর করা হলে তা অবৈধ। আজিজুর রহমান ফাতেউল্লাহ বনাম ছইত্ৰাম [(১৯৪০) করাচি ২০০] মামলার সিদ্ধান্ত মতে, কার্যত অভিভাবক কর্তৃক নাবালকের সম্পত্তি ইজারা দেয়া হলে ইজারাদার উক্ত সম্পত্তি ব্যবহার বা দখল করার জন্য নাবালককে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য।
🔹কার্যত অভিভাবক কর্তৃক বিক্রীত সম্পত্তি রদ করার জন্য নাবালক সাবালকত্ব অর্জনের ১২
বছরের মধ্যে মামলা দায়ের করতে পারে।
🔹নাবালকের অত্যাবশ্যকীয় প্রয়ােজনে যেমন, খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ও শিক্ষার জন্য কার্যত অভিভাবক নাবালকের অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি বা রেহেনাবদ্ধ করতে পারে। অত্যাবশ্যকীয় প্রয়ােজন অবশ্য অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এবং নাবালকের পিতার আর্থিক মর্যাদার ভিত্তিতে নির্ণয় করতে হবে।