➡️সংসদ সদস্যদের যােগ্যতা : সংবিধানের ৬৬(১) অনুচ্ছেদের বিধান মােতাবেক সংসদ হিসেবে নির্বাচিত হবার জন্য কিংবা নির্বাচিত হবার জন্য বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য নিম্নলিখিত যােগ্যতার প্রয়ােজন :
🔹 প্রার্থীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
🔹তাঁর বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হতে হবে।
সংসদ সদস্যদের অযােগ্যতা।
⭕সংবিধানের ৬৬ (২) অনুচ্ছেদে সংসদ সদস্য পদের অযােগ্যতা সম্পর্কে বিধান রয়েছে।
🔹যে সকল কারণে কোনাে ব্যক্তি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হতে পারবেন না কিংবা নির্বাচিত হলেও সদস্যপদ হারাবেন সেগুলি নিম্নরূপ :
⭕ কোনাে উপযুক্ত আদালত যদি তাকে অপ্রকৃতিস্থ বলে ঘােষণা করেন।
⭕ দেউলিয়া ঘােষিত হয়ে থাকলে দায় হতে অব্যাহতি লাভ না করে থাকেন।
⭕ তিনি কোনাে বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন কিংবা কোনাে বিদেশি রাষ্ট্রের আনুগত্য স্বীকার করেন।
⭕তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোনাে ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কমপক্ষে দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছর অতিক্রান্ত না হয়ে থাকে।
⭕ আইনের দ্বারা পদাধিকারীকে অযােগ্য ঘােষণা করে না এমন পদ ব্যতীত তিনি প্রজাতন্ত্রের এমন কোনাে লাভজনক পদে বা কর্মে অধিষ্ঠিত থাকেন। অথবা,
⭕ তিনি যদি কোনাে আইনের দ্বারা বা আইনের অধীনে অনুরূপ নির্বাচনের জন্য।অযােগ্য হন।
🔹সংসদ সদস্যদের আসন শূন্য হওয়া :
🔸বাংলাদেশ সংবিধানের ৬৭ অনুচ্ছেদে সংসদ সদস্যদের আসন শূন্য হওয়া সম্পর্কে বিধান রয়েছে। এগুলি নিম্নরূপ :
🔸 তাঁর নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম বেঠকের তারিখ হতে ৯০ দিনের মধ্যে তিনি শপথ গ্রহণ বা ঘােষণা করতে ও শপথ পত্রে বা ঘােষণা পত্রে স্বাক্ষর দান করতে অসমর্থ হন। তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ মেয়াদ অতিবাহিত হবার পূর্বে স্পীকার যথার্থ কারণে তা বর্ধিত করতে পারবেন।
🔹 সংসদের অনুমতি না নিয়ে তিনি একাদিক্রমে ৯০ বৈঠক দিবসে অনুপস্থিত থাকেন;
🔹সংসদ ভেঙ্গে যায়;
🔹তিনি সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের ২ দফা অনুযায়ী অযােগ্য হয়ে পড়েন। অর্থাৎ
অপ্রকৃতিস্থ হলে বা
🔹দেউলিয়া ঘােষিত হলে কিংবা
🔹 বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন বা।আনুগত্য স্বীকার করলে, কিংবা
🔹নৈতিক স্খলনের জন্য ২ বছর কারাদণ্ড হলে ও মুক্তিলাভের।পর ৫ বছর অতিক্রান্ত না হয়ে থাকলে, কিংবা
🔹 প্রজাতন্ত্রের কোনাে লাভজনক পদ গ্রহণ
করলে যা নিষিদ্ধ করা হয়েছে, অথবা,
🔹 অন্য কোনাে আইনে তিনি নির্বাচনের জন্য।অযােগ্য হয়ে থাকেন। তিনি পদত্যাগ করলে।
🔹সংসদ সদস্যদের বিশেষ অধিকার ও দায়মুক্তি :
➡️সংবিধানের ৭৮ অনুচ্ছেদে সংসদ সদস্যদের বিশেষ অধিকার ও দায়মুক্তির বিধান
রয়েছে।
⭕এই অনুচ্ছেদের (২) উপ-অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, সংসদের যে সদস্য বা কর্মচারীর উপর সংসদের কার্যপ্রণালী নিয়ন্ত্রণ, পরিচালনা বা শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব ন্যস্ত থাকবে, তিনি
সকল ক্ষমতা প্রয়ােগ সম্পর্কিত কোনাে ব্যাপারে কোনাে আদালতের এখতিয়ারের অধীন হবেন।
➡️এছাড়া (৩) উপ-অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, সংসদে বা সংসদীয় কোনাে কমিটিতে কিছু
বলা বা ভােটদানের জন্য কোনাে সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে কোনাে আদালতে কার্যধারা গ্রহণ
করা যাবে না।
⭕ উপ-অনুচ্ছেদের বিধান মতে, সংসদের কর্তৃত্বে কোনাে রিপাের্ট, কাগজপত্র, ভােট বা কার্যধারা প্রকাশের জন্য কোনাে ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনাে আদালতে কোনাে কার্যধারা।গ্রহণ করা যাবে না। এছাড়া এই অনুচ্ছেদের বিধান সাপেক্ষে সংসদের আইন দ্বারা সদস্যদের।
🔹বিশেষ অধিকার নির্ধারণ করা যাবে।সংসদ আইন বৈধকরণ করে প্রত্যেক গণতান্ত্রিক দেশের আইনসভা সাধারণত জনমতের প্রতিধ্বনি হিসেবে কাজ করে থাকে। সংসদ সদস্যগণ জনগণের প্রতিনিধি এবং তাদের মাধ্যমে জনমতের প্রতিফলন ঘটে থাকে। জনগণের ইচ্ছাকে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বৈধকরণ করা হয়। তাই বলা হয় যে।সংসদ আইন বৈধকরণ করে মাত্র, নতুন আইন প্রণয়ন করে না।