➡️সুনির্দিষ্ট চুক্তি সম্পাদন :

🔹সুনির্দিষ্ট চুক্তি পালন বলতে চুক্তির শর্তানুযায়ী দায়িত্ব পালন বুঝায়। চুক্তির শর্ত নির্ধারণ করা চুক্তিভুক্ত পক্ষগণের নিজস্ব ব্যাপার।

🔹 কিন্তু একবার চুক্তি হয়ে গেলে তা যথাযথভাবে পালন না করলে চুক্তি আইন অনুযায়ী চুক্তিভঙ্গের প্রতিকার পাওয়া যায়। সাধারণ আইনে আর্থিক ক্ষতিপূরণই মুখ্য প্রতিকার । কিন্তু ইকুইটি আইনে এর অতিরিক্ত প্রতিকার হিসেবে চুক্তিটি সুনির্দিষ্টভাবে পালন করতে বাধ্য করাও একটি অন্যতম প্রতিকার হিসেবে বিবেচিত। ব্রিটিশ আইন বিশারদ মেইটল্যান্ড বলেন যে, “সুনির্দিষ্ট সম্পাদনের ডিক্রি.মঞ্জুরের জন্য আদালত মামলার বিবাদীকে এই মর্মে নির্দেশ প্রদান করবেন যে, তাকে অবশ্যই তার অঙ্গীকার মত চুক্তিটির শর্তাদি সুসম্পন্ন করতে হবে, অন্যথায় আদালত অবমাননার দায়ে কারাদণ্ড ভােগ করতে হবে।” (Maitland_says, “In granting a decree for specific performance the court in effect, says to the defendant that he must do the very thing
he promised to do on pain of going to prison as a contemnor of court.”) 1 fainalita.

🔸চুক্তি পালনের আদেশ প্রদান আদালতের স্বেচ্ছাধীন এখতিয়ার, যদিও তা সুনির্দিষ্ট মূলনীতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়ােগ করা হয়।

⭕যে সেকল চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে পালন করা যায়
বাংলাদেশে প্রযােজ্য ১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনে (The Specific Relief Act, 1877) ১২ ধারায় বর্ণনা করা হয়েছে কখন আদালত একটি চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে পালন করার আদেশ দিয়ে থাকেন।

🔸এগুলি নিম্নরূপ :

🔹যখন চুক্তিগত কার্যসম্পাদন সম্পূর্ণভাবে বা আংশিকভাবে কোনাে ট্রাস্টের অন্তর্ভুক্ত।

🔹 যখন চুক্তিগত কার্যটি সম্পাদন না করলে যে ক্ষতি হবে তা নির্ণয় করার কোনাে
মানদণ্ড নাই।

🔹 যখন চুক্তিভুক্ত কার্যটি সম্পাদন না করলে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দ্বারা পর্যাপ্ত প্রতিকার হয় না।

🔹যখন চুক্তিভুক্ত কার্যটি এমন হয় যে, তা সম্পাদন না করলে আর্থিক ক্ষতিপূরণের
মাধ্যমে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে না।

🔸এ ধারায় আরাে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, যদি না এবং যতক্ষণ পর্যন্ত না বিপরীত কিছু প্রমাণিত হয়, আদালত এটা অবশ্যই ধরে নেবে যে স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের চুক্তিভঙ্গের পর্যাপ্ত প্রতিকার আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানের মাধ্যমে সম্ভব নয় এবং অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের চুক্তি ভঙ্গের প্রতিকার তেমনভাবে করা যায়।যেমন, ক এর নিকট খ এর জিম্মাদার হিসেবে কিছু পণ্য রয়েছে।

⭕ক উক্ত পণ্য.অন্যায়ভাবে অন্যের নিকট হস্তান্তর করে। এক্ষেত্রে একই পরিমাণ পণ্য খ এর নিকট অর্পণ.করতে ক দায়ী থাকবে এবং খ এর বাধ্যবাধকতায় সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদন করতে পারে।

🔹বাধ্যতামূলক ও নিষেধমূলক নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পার্থক্যসমূহ নিম্নরূপ :

🔹 বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞার দ্বারা আদালত কোনাে পক্ষকে একটি নির্দিষ্ট কাজ সম্পন্ন।

পক্ষান্তরে, নিষেধমূলক নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে কোনাে একটি নির্দিষ্ট কাজ করা হতে বিরত
থাকার জন্য নির্দেশ দেয়।

🔹বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য হলাে নালিশী সম্পত্তি বা বিষয়বস্তু পূর্ব অবস্থায়
ফিরায়ে আনা।

🔸অপরপক্ষে, নিষেধমূলক নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য হলাে কোনাে অন্যায় কার্যকে প্রতিহত করা।

🔹আদেশমূলক নিষেধাজ্ঞা হলাে বাধ্যতামূলক যার সংজ্ঞা ১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৫৭ ধারায় বর্ণনা করা হয়েছে। এই ধারায় বলা হয়েছে যে, যখন একটি বাধ্যবাধকতা ভঙ্গ করাকে রােধ করার জন্য কোনাে একটি নির্দিষ্ট কাজ সম্পন্ন করতে বাধ্য করা আবশ্যকীয় হয় সে ক্ষেত্রে আদালত তার স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা বলে যে চুক্তি ভঙ্গ করার অভিযােগ করা হয়েছে তা রােধ করা এবং সেই সঙ্গে প্রয়ােজনীয় কাজ সম্পাদনে বাধ্য করার জন্য নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে পারেন।

🔹পক্ষান্তরে, নিষেধমূলক নিষেধাজ্ঞা প্রতিরােধমূলক যার সংজ্ঞা একই আইনের ৫২ ধারায় বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে যে, এই প্রতিকার করা হয় আদালতের স্বেচ্ছাধীন।

🔸ক্ষমতা বলে, অস্থায়ী বা স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে।

🔸 কোনাে একটি নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদনের প্রয়ােজনীয়তা অনুভূত হলে বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা হয়। অপরদিকে, কোনাে চুক্তি ভঙ্গ বা অন্য কোননা অন্যায় কার্যকে রােধ
করার প্রয়ােজনীয়তা দেখা দিলে নিষেধমূলক নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা হয়।

🔸উভয় ক্ষেত্রে একই নীতি প্রযােজ্য হলেও বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুরের ক্ষেত্রে
আদালত বেশি সতর্কতা অবলম্বন করে থাকেন।
নিষেধমূলক নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুরের ক্ষেত্রে আদালত তুলনামূলক কম সতর্কতা অবলম্বন করে
থাকেন।

🔸নিষেধমূলক নিষেধাজ্ঞার চেয়ে তুলনামূলক ভাবে বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞার চাহিদা বেশি পরিলক্ষিত হয়।

🔹ইকুইটি আদালতে প্রয়ােগ :

➡️নিষেধাজ্ঞার এই প্রতিকারগুলিকে নিবারণমূলক প্রতিকার বলা হয়। ইহা অধিকার হিসেবে।দাবি করা যায় না, কেননা এক্ষেত্রে আদালত ইচ্ছাধীন ক্ষমতা বা সুবিবেচনার এখতিয়ার প্রয়ােগ করে থাকে। তবে এ ইচ্ছাধীন ক্ষমতা অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত বিচার বিভাগীয় মূলনীতি দ্বারা।সমর্থিত হতে হবে এবং আপিল আদালত কর্তৃক সংশােধনযােগ্য হতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *