কর স্থিতিস্থাপকতা (Tax elasticity) :
⭕ কোনাে করের ক্ষেত্রে কর ভিত্তির
পরিবর্তনের হারের চেয়ে যদি করের পরিমাণের পরিবর্তনের হার অধিক হয়, তবে সেই করকে
স্থিতিস্থাপক কর বলে।
🔴আয়করের প্রগতিশীল কর হার স্থিতিস্থাপক করের উদাহরণ। প্রয়ােজন অনুসারে প্রত্যক্ষ করকে হ্রাস-বৃদ্ধি করে রাজস্বের পরিমাণ বাড়ানাে বা কমানাে যায় বলে এই কর স্থিতিস্থাপক।
🔹বাংলাদেশের কর কাঠামাে কি স্থিতিস্থাপক :
🔹বাংলাদেশের কর ব্যবস্থা স্থিতিস্থাপক নয়।
কারণ কর ব্যবস্থায় পরােক্ষ করের অবদান অনেক বেশী যা বৈদেশিক বাণিজ্যের উঠানামা হ্রাস-বৃদ্ধি পায়।
🔸স্থিতিস্থাপক না হওয়ার কারণ :
⭕ কর স্থিতিস্থাপকতা ব্যবস্থায় কার আয় বেশী এবং কার আয় কত তা নির্ণয় করতে হয়, যা খুব একটা সহজসাধ্য নয়। ফলে কর নির্ধারণ জটিল হয়।
⭕ কর স্থিতিস্থাপকতা ব্যয় ব্যবস্থায় উদ্বৃত্ত আয়ের উপর বেশি কর দিতে হয় বিধায়
সঞ্চয় নিরুৎসাহিত হয়। ফলে বিনিয়ােগ বাধাগ্রস্ত হয়।
⭕এই কর ব্যবস্থায় বেশি আয় হলে বেশি কর দিতে হবে বিধায় কর ফাঁকি দেওয়ার
প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
⭕কর স্থিতিস্থাপকতা ব্যবস্থায় বিভিন্ন আয়ের স্তরের লােকের মধ্যে কি অনুপাতে কর
ধার্য হবে তার কোনাে সঠিক নিয়ম থাকে না, ফলে কর কর্তৃপক্ষ ইচ্ছামতাে অন্যায্য করহার নির্ধারণ করতে পারে।
🔸কর কাঠামােতে স্থিতিস্থাপ কর ব্যবস্থার সুবিধা এবং পরামর্শ :
🔹ন্যায়সঙ্গত (Justifiable) : কর স্থিতিস্থাপকতা ন্যায়সঙ্গত কারণ এ ব্যবস্থায় বেশি
আয়ের লােকজনকে বেশি হারে এবং কম আয়ের লােকজনকে কম হারে কর দিতে হয় ।
🔹উদ্বৃত্ত আয়ের ওপর কর ধার্য হয় (Tax on surplus income) : অধ্যাপক হবসনের
মতে- প্রত্যেক ব্যক্তির আয়ের মধ্যে দুটি অংশ থাকে । এই দুটি অংশ হলাে ব্যয় ও উদ্বৃত্ত ।
➡️আয়ের একটি অংশ ব্যয় করার পর অবশিষ্ট অংশই হলাে উদ্বৃত্ত বা সঞ্চয়। ব্যয় অংশের উপর
কর ধার্য করা উচিত নয়। উদ্বৃত্ত অংশের কর ধার্য করা উচিত। হবসনের মতে যার আয় কম তার আয়ের মধ্যে ব্যয়ের অংশ বেশি এবং যার আয় বেশি তার ব্যয়ের অংশ কম থাকে।
⭕ফলে স্থিতিস্থাপকতায় কর ধার্য করা হলে উদ্বৃত্ত অংশের ওপর বেশি কর আদায় করা যাবে।
➡️ সম্পদের সুষম বন্টন(Balanced distribution of resources) :
🔹স্থিতিস্থাপক কর ব্যবস্থার মাধ্যমে ধনীদের নিকট হতে অধিক কর আদায় করে দারিদ্র্য বিমােচনে তা ব্যবহার করা যাবে। ফলে সম্পদের সুষম বন্টন করা সম্ভব হবে।
🔸অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ (Cansistent with economic Condition):
এ ব্যবস্থায় সবচেয়ে জনপ্রিয় দিক হলাে, অর্থনৈতিক মন্দার সময় আয় কম হলে সকলেই কম হারে কর দিবে আবার অর্থনীতি চাঙ্গা হলে আয় বাড়বে তখন সকলেই বেশি কর দিবে।