➡️ দুর্ঘটনার নােটিশ সংক্রান্ত বিধানাবলি ও পদ্ধতি :

🔸বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর সপ্তম অধ্যায়ের ৮০, ৮১ এবং ৮২ ধারায় দুর্ঘটনার
নােটিশ সংক্রান্ত বিধি ও পদ্ধতির বিধান রয়েছে। ৮০ ধারার বিধানমতে

🔴যদি কোনাে প্রতিষ্ঠানে কোনাে দুর্ঘটনা ঘটে, ফলে প্রাণহানি বা শারীরিক জখম হয়
অথবা যদি কোনাে প্রতিষ্ঠানে দুর্ঘটনাজনিত বিস্ফোরণ, প্রজ্জ্বলন, অগ্নিকান্ড, সবেগে পানি প্রবেশ বা ধুম্র উদগীরণ ঘটে, তাহলে মালিক পরিদর্শককে পরবর্তী দুই কার্য দিবসের মধ্যে তৎসম্পর্কে নােটিশ মারফত অবহিত করবেন।

🟣তবে শর্ত থাকে যে, উল্লেখিত ঘটনা সংঘটিত হওয়ার সাথে সাথে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস
করা কিংবা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়ােজনীয় কার্যক্রম আরম্ভের
জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সরকার, ফায়ার সার্ভিস, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন
পরিদপ্তর, থানা, নিকটবর্তী হাসপাতাল বা সরকারি বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানকে ফোন,মােবাইল ফোন, sms, অথবা ফ্যাক্সের মাধ্যমে অবহিত করবে।

🔵যে ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোন দুর্ঘটনায় শারীরিক জখম হওয়ার কারণে
উহা কোন আহত শ্রমিককে আটচল্লিশ ঘন্টার অধিক সময় পর্যন্ত কাজে অনুপস্থিত থাকতে বাধ্য
করে, সে ক্ষেত্রে বিধি দ্বারা নির্ধারিত রেজিস্টারে ইহা লিপিবদ্ধ করে রাখতে হবে।

⚫উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত রেজিস্টারে লিখিত বিবরণের একটি কপি মালিক প্রত্যেক
বৎসর ৩০শে জুন এবং ৩১শে ডিসেম্বর এর পরবর্তী পনর দিনের মধ্যে প্রধান পরিদর্শকের
নিকট প্রেরণ করবেন।

🟠৮১ ধারার বিধামনমতে—যে ক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠানে বিধি দ্বারা নির্ধারিত প্রকৃতির কোন।
বিপজ্জনক ঘটনা ঘটে সে ক্ষেত্রে, এতে কোন শারীরিক জখম হােক বা না হােক, মালিক
পরবর্তী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তৎসম্পর্কে নােটিশ মারফত পরিদর্শককে অবহিত করবেন।

🔸৮২ ধারার বিধামনমতে-

⭕যে ক্ষেত্রে দ্বিতীয় তফসিলে উল্লিখিত ব্যাধি দ্বারা কোন প্রতিষ্ঠানে কোন শ্রমিক আক্রান্ত হন, সে ক্ষেত্রে মালিক অথবা সংশ্লিষ্ট শ্রমিক অথবা কর্তৃক নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তি, বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে ও সময়ের মধ্যে, তৎসম্পর্কে পরিদর্শককে নােটিশ মারফত অবহিত করবেন।

🟣যদি কোন রেজিস্টার্ড চিকিৎসক কোন প্রতিষ্ঠানের বর্তমান বা ভূতপূর্ব কোন
শ্রমিককে চিকিৎসাকালে দেখেন যে, তিনি দ্বিতীয় তফসিলে উল্লিখিত কোন ব্যাধিতে ভুগছেন ভুগিতেছেন বলে তার সন্দেহ হচ্ছে, তা হলে উক্ত চিকিৎসক অবিলম্বে একটি লিখিত রিপাের্ট
মারফত প্রধান পরিদর্শককে নিম্নলিখিত বিষয় অবহিত করবেন।

🔸যথা :

🔹রােগীর নাম এবং ডাক যােগাযােগের ঠিকানা;

🔹রােগী যে রােগ ভুগছেন বা ভুগিতেছেন বলে সন্দেহ হচ্ছে, তার নাম;

🔹যে প্রতিষ্ঠানে রােগী বর্তমানে কাজ করছেন বা সর্বশেষ কাজ করছেন, তার নাম
ও ঠিকানা।

🔹প্রধান পরিদর্শক কর্তৃক নির্ধারিত সংশ্লিষ্ট মালিক উক্তরূপ পেশাগত ব্যাধিতে আক্রান্ত,
ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকের চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন।

🔹সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, দ্বিতীয় তফসিলে কোন নূতন রোগ সংযােজন করতে পারবে অথবা উহা হতে কোন রােগ বাদ দিতে পারবে ।

🔹পরামর্শ :

➡️দূর্ঘটনার ফলে মৃত শ্রমিকের স্ত্রী ক্ষতিপূরণ দাবি করলে হােটেল মালিক বাংলাদেশ শ্রম
আইন, ২০০৬ এর ১৫০ ধারার বিধানমতে যে ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকে না তা
নিম্নরূপ :

🔸 জখমের ফলে শ্রমিক যদি তিন দিনের অধিক সময় সম্পূর্ণ বা আংশিক কর্মক্ষমতা না
হারান.

🔸 দুর্ঘটনায় আহত হবার সময় কোনাে শ্রমিক মদ্যপান বা মাদকদ্রব্য সেবনের দ্বারা
প্রভাবাধীন থেকে থাকেন।

🔸 শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রণীত বিধি বা সুস্পষ্ট আদেশ যদি শ্রমিক
ইচ্ছাকৃত অমান্য করে।

🔸শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আঘাত নিরােধক নিরাপত্তা সরঞ্জাম থাকা
সত্ত্বেও যদি শ্রমিক ইচ্ছাকৃতভাবে তা ব্যবহার না করে কিংবা উপেক্ষা করে।

🔴উপরােক্ত কারণ ব্যতীত শ্রমিকের মৃত্যু হলে,এই আইনের ১৫১ ধারায় ক্ষতিপূরণের পরিমাণ সম্পর্কে বিধান রয়েছে। পঞ্চম তফসিলে
এ সম্পর্কে বিস্তারিত বিধান রয়েছে।

➡️জখমের ফলে মৃত কোনাে শ্রমিকের জন্য প্রদেয় ক্ষতিপূরণের অর্থ শ্রম আদালতে জমা দিতে হবে এবং আইন অনুযায়ী আদালত তা বণ্টন করবেন। মালিকপক্ষ যদি কোনাে ঠিকাদার নিয়ােগ করে থাকেন এবং সেই ঠিকাদার কর্তৃক নিযুক্ত শ্রমিক মালিকের কাজে নিয়ােজিত
থাকেন তাহলে উক্ত শ্রমিকের জখম বা মৃত্যু হলেও মালিক ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবেন।

⭕তবে কোনাে জখমপ্রাপ্ত ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষে শ্রমিক কিনা, বা কোনাে ব্যক্তির ক্ষতিপূরণের
দায় রয়েছে কিনা কিংবা ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ও মেয়াদ কিংবা অক্ষমতার প্রকৃতি সম্পর্কে কোনাে প্রশ্ন উত্থাপিত হলে ১৬৬ ধারা মােতাবেক শ্রম আদালত তা নিষ্পত্তি করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *