➡️ প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা :
বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর চতুর্থ অধ্যায়ে ধারা ৪৫ হতে ধারা ৫০-এ প্রসূতি
কল্যাণ সুবিধা সংক্রান্ত বিধান রয়েছে।
➡️ এগুলি নিমরূপ :
কোনাে মহিলা সন্তান প্রসবের অব্যবহিত পরবর্তী আট সপ্তাহ কোনাে প্রতিষ্ঠানে কাজ
করতে পারবেন না এবং মালিক পক্ষও তাকে কাজ করাতে পারবেন না।
🔸এ ছাড়া দশ সপ্তাহের মধ্যে কোনাে মহিলার সন্তান প্রসবের সম্ভাবনা থাকলে কিংবা মালিক পক্ষ এ বিষয়ে অবহিত থাকলে শ্রমসাধ্য কোনাে কাজ কিংবা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয় এরূপ কাজে তাকে নিয়ােজিত করা যাবে না। (ধারা-৪৫) প্রত্যেক মহিলা শ্রমিক তার সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখের জন্য প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা।
➡️পাবেন এবং মালিক পক্ষ তাকে এ সুবিধা প্রদানে বাধ্য থাকবেন। তার সন্তান প্রসবের
অব্যবহিত পূর্বে কমপক্ষে ছয় মাস ঐ মালিকের অধীনে কাজ করে থাকলে ঐ সুবিধা পাবেন।
🔸এছাড়া সন্তান প্রসবের সময় তার দুই বা ততােধিক সন্তান জীবিত থাকলে তিনি প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা পাবেন না, তবে ছুটি পেতে পারেন। (ধারা-৪৬)
🔹এরূপ সুবিধা পরিশােধের পদ্ধতি সম্পর্কে বিধান রয়েছে ৪৭ ধারায়।
➡️বলা হয়েছে যে,কোনাে অন্তঃসত্ত্বা মহিলা এই আইনের অধীনে প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা পাবার অধিকারী হলে তিনি মালিককে লিখিতভাবে বা মৌখিকভাবে এই মর্মে নােটিশ দিবেন যে, আট সপ্তাহের মধ্যে তার সন্তান প্রসবের সম্ভাবনা রয়েছে। তার মৃত্যু হলে এই সুবিধা সাত দিনের মধ্যে সন্তান প্রসব সম্পর্কে মালিককে অবহিত করবেন।
➡️নােটিশ প্রদানের পরদিন নােটিশে সেটাও উল্লেখ করতে হবে। এরূপ নােটিশ প্রদান না করে থাকলে তার সন্তান প্রসবের থেকে অথবা সন্তান প্রসবের পর দিন থেকে পরবর্তী আট সপ্তাহ পর্যন্ত সে মহিলাকে কাজে ।অনুপস্থিত থাকার অনুমতি দেয়া হবে ।
🔹সংশ্লিষ্ট মহিলার ইচ্ছানুযায়ী নিম্নলিখিত যে কোনাে পন্থায় প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা প্রদান।কে গ্রহণ করবেন এই
করবেন :
➡️যেক্ষেত্রে কোনাে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের নিকট হতে এই মর্মে প্রাপ্ত প্রত্যয়নপত্র পেশ করা হয় যে, মহিলার আট সপ্তাহের মধ্যে সন্তান প্রসবের সম্ভাবনা আছে,সেক্ষেত্রে প্রত্যয়নপত্র পেশ করার পরবর্তী তিন কর্ম দিবসের মধ্যে এসব পূর্ববর্তী
আট সপ্তাহের জন্য প্রদেয় প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা প্রদান করবেন এবং সন্তান প্রসবের
প্রমাণ পেশ করার তারিখ হতে পরবর্তী তিন কর্ম দিবসের মধ্যে অবশিষ্ট সময়ের জন্য প্রদেয় সুবিধাদি প্রদান করবেন।
অথবা,
➡️মালিকের নিকট সন্তান প্রসবের প্রমাণ পেশ করার পরবর্তী তিন কর্ম দিবসের মধ্যে সন্তান প্রসবের তারিখসহ এর পূর্ববতী আট সপ্তাহের জন্য এদেয় প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা প্রদান করবেন,
এবং উক্ত প্রমাণ পেশের পরবর্তী আট সপ্তাহের মধ্যে অবশিষ্ট মেয়াদের সুবিধা প্রদান করবেন।
অথবা,
➡️ সন্তান প্রসবের প্রমাণ পেশ করার পরবর্তী তিন কর্ম দিবসের মধ্যে উক্ত সম্পূর্ণ
সময়ের জন্য প্রদেয় প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা প্রদান করবেন। সন্তান এসবের প্রমাণ তিন মাসের মধ্যে পেশ করতে ব্যর্থ হলে তিনি এই সুবিধা পাবার অধিকারী হবেন।
➡️মহিলার মৃত্যুর ক্ষেত্রে প্রসূতিকল্যাণ সুবিধা প্রসূতিকল্যাণ সুবিধা পাওয়ার অধিকারী কোনাে মহিলা সন্তান প্রসবকালে অথবা উহার পরবর্তী আট সপ্তাহের মধ্যে মৃত্যুবরণ করলে, শিশু সন্তানটি বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে মালিক শিশুর দায়িত্ব গ্রহণকারী ব্যক্তিকে এবং বেঁচে না থাকলে মনােনীত ব্যক্তিকে এবং মনােনয়ন না থাকলে আইনগত প্রতিনিধিকে সুবিধা প্রদান করবেন।
➡️এইরূপ কোনাে মহিলা প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা পাওয়ার অধিকারী হওয়ার সময়সীমার মধ্যে
কিন্তু সন্তান প্রসবের পূর্বে মারা গেলে মালিক উক্ত মহিলার মৃত্যুর তারিখসহ তৎপূর্ববর্তী সময়ের জন্য উক্তরূপ সুবিধা প্রদান করতে বাধ্য থাকবেন।
➡️ তবে ইতােমধ্যে প্রদত্ত সুবিধা আইনগত প্রাপ্য টাকা হতে বেশি হলে মালিক উহা ফেরত নিতে পারবেন না।
🔸মৃত্যুর ক্ষেত্রে
মনােনীত ব্যক্তি এবং মনােনীত ব্যক্তি না থাকলে তার আইনগত প্রতিনিধিকে এইরূপ সুবিধা প্রদান করা হবে।
🔹প্রসূতি ছুটিতে থাকাকালীন কোনাে মহিলাকে বরখাস্ত করা যায় কিনা ।
➡️পর্যাপ্ত কারণ ছাড়া প্রসূতি ছুটিতে থাকাকালীন সময়ে কোনাে মহিলাকে বরখাস্তের নােটিশ দেয়া হলে আইন অনুসারে প্রাপ্য মাতৃকালীন সুবিধা থেকে তাকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যেই দেয়া
হয়েছে বলে গণ্য করা হবে।
➡️ তাই শ্রম আইনের ধারা ৫০-এ বলা হয়েছে যে, যদি কোনাে মহিলার সন্তান প্রসবের পূর্ববর্তী ৬ মাস এবং সন্তান প্রসবের পরবর্তী ১ সপ্তাহ মেয়াদের মধ্যে
তাকে চাকরি হতে ডিসচার্জ, বরখাস্ত বা অপসারণের জন্য বা অন্যভাবে চাকরি অবসানের জন্য মালিক কোনাে নােটিশ বা আদেশ দেন এবং উক্তরূপ নােটিশ বা আদেশ প্রদানের যদি যথেষ্ট কোনাে কারণ না থাকে তাহলে, এই নােটিশ বা আদেশ প্রদান করা হলে, এই অধ্যায়ের অধীনে সংশ্লিষ্ট মহিলা যে প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা পাবার অধিকারী হতেন তা থেকে তিনি বঞ্চিত হবেন।