➡️অনুচিত প্রভাব : চুক্তি আইনের ১৬ ধারা অনুযায়ী চুক্তিভুক্ত পক্ষের মধ্যে বিশেষ
সম্পর্কের কারণে এক পক্ষ যদি অপর পক্ষের ইচ্ছাকে অহেতুক প্রভাবিত করতে পারে এবং এ অবস্থার সুযােগ গ্রহণ করে সে পক্ষ কোনাে সুবিধা আদায় করে, তবে সে চুক্তিটি অনুচিত প্রভাব
বলে সম্পাদিত হয়েছে বলে ধরা যায়।
🔹 এ ধারামতে নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির উপর অনুচিত প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
➡️(১) উক্ত ব্যক্তি যদি অপর ব্যক্তিটির উপর প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষভাবে কর্তৃত্ব খাটানাের
অবস্থায় থাকে অথবা যেখানে অপর পক্ষের সাথে তার বিশ্বাসমূলক সম্পর্ক
(fiduciary relation) বিদ্যমান থাকে।
➡️অপর ব্যক্তি যদি বার্ধক্য, পীড়া বা অন্য কোনাে কারণে এরূপভাবে শারীরিক বা
মানসিক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে থাকে, যাতে তার স্বাভাবিক মানসিক ভারসাম্য
সাময়িকভাবে বা চিরতরে বিনষ্ট হয়ে যায় ।
🔹চুক্তি আইনের ১৬ ধারা অনুযায়ী চুক্তিভুক্ত পক্ষের মধ্যে বিশেষ সম্পর্কের কারণে এক পক্ষ যদি অপর পক্ষের ইচ্ছাকে অহেতুক প্রভাবিত করতে পারে এবং এ অবস্থার সুযােগ গ্রহণ করে সে পক্ষ কোনাে সুবিধা আদায় করে, তবে সে চুক্তিটি অনুচিত প্রভাব বলে সম্পাদিত হয়েছে বলে ধরা যায়। এ ধারামতে নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্র। এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির উপর অনুচিত
প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
🔹অনুচিত প্রভাব প্রমাণের দায়িত্বঃ
🔸কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে এরূপ অনুচিত প্রভাব বিস্তার করার আশঙ্কা রয়েছে তার পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করা সম্ভব নয়। তবে কতকগুলি বিশেষ সম্পর্কের ক্ষেত্রে এরূপ প্রভাব অনুমিত হয়ে থাকে।
🔹এগুলি হচ্ছে পাওনাদার ও খাতক, অভিভাবক ও তার রক্ষণাধীন ব্যক্তি, শিক্ষক ও তার ছাত্র, আইনজীবী ও তার মক্কেল, মালিক ও তার প্রতিনিধি, চিকিৎসক ও তার রােগী, পিতা বা
মাতা ও তার সন্তান, ধর্মীয় উপদেষ্টা ও তার অনুসারী, স্বামী ও স্ত্রী, কর্মদাতা ও কর্মচারী।
🔹সকল বিশেষ সম্পর্কের কারণে যদি অনুচিত প্রভাব অনুমিত হয়ে থাকে, তাহলে যার প্রভাব
বিস্তারের সম্ভাবনা আছে, তাকেই প্রমাণ করতে হবে যে, সে কোনাে প্রকার অনুচিত প্রভাব
বিস্তার করে নাই। কিন্তু যে ক্ষেত্রে এরূপ প্রভাব বিস্তারের কোনাে বৈধ অনুমান নেই সেক্ষেত্রে
অনুচিত প্রভাবের অভিযােগকারীর উপরই তা প্রমাণের দায়িত্ব বর্তায়।
➡️অনুচিত প্রভাবের ফলাফল :
অনুচিত প্রভাবের ফলাফল বাতিলযােগ্য অর্থাৎ ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষের ইচ্ছানুযায়ী তা বাতিল
করা যায় আবার বৈধ রাখা যায়।
🔹বলপ্রয়ােগ ও অনুচিত প্রভাবের মধ্যে পার্থক্য (Distinction between coercion and
undue influence) :
🔸 বলপ্রয়ােগে যে পন্থায় একটি পক্ষের সম্মতি আদায় করা হয় তা অনুভবযােগ্য। এটা হয় শক্তি প্রয়ােগ বা প্রয়ােগের হুমকি, কিংবা আটক বা আটকের হুমকি। কিন্তু অনুচিত প্রভাবে একটি পক্ষকে যেভাবে চুক্তি করতে প্রবৃত্ত করা হয় তা তত সুস্পষ্ট
নয়। এখানে শক্তি প্রয়ােগও থাকে না কিংবা কিছুর হুমকিও থাকে না। তবুও স্বাধীন মতামত প্রকাশ করার মতাে পরিস্থিতিতে সে পক্ষ অবস্থান করে না।
🔸বলপ্রয়ােগের ক্ষেত্রে পক্ষগণের মধ্যে পূর্ব হতেই কোনাে সম্পর্ক বিদ্যমান থাকে না।কিন্তু অনুচিত প্রভাবের ক্ষেত্রে পূর্ব হতেই তাদের মধ্যে এক প্রকার সম্পর্ক বিদ্যমান।
➡️বলপ্রয়ােগের ক্ষেত্রে চুক্তি বাতিল করতে চাইলে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে প্রমাণ করতে হয়
কিভাবে অপরপক্ষ তার উপর বলপ্রয়ােগ করেছে। পক্ষান্তরে, অনুচিত প্রভাবের
ক্ষেত্রে যে সকল সম্পর্কের দরুন অনুচিত প্রভাব অনুমিত হয়ে থাকে, সে সকল
ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারকারিকেই প্রমাণ করতে হয় যে, সে কোনাে প্রকার প্রভাব বিস্তার
করে সুবিধা গ্রহণ করে নাই। ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষের উপর প্রমাণের দায়িত্ব থাকে না।
কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকেই প্রমাণ করতে হবে অপরপক্ষ কিভাবে তার
উপর প্রভাব বিস্তার করেছে।
➡️বলপ্রয়ােগের ক্ষেত্রে কোনাে প্রকার চাপ বা ভীতির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ স্বাধীনভাবে।
তার মনােভাব ব্যক্ত করতে পারে না।
🔸অপরপক্ষে, অনুচিত প্রভাবের ক্ষেত্রে ক্ষতি
পক্ষের উপর এমনভাবে অনুচিত প্রভাব বিস্তার করা হয় যে,জন্য আলােচনা করা তার পক্ষে অসুবিধাজনক হয়ে পড়ে।
➡️আইনের চোখে অনুচিত প্রভাব বলে প্রতীয়মান হলে তাকে বলপ্রয়ােগ বলেও গণ্য।
করা যেতে পারে।